রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম | আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম
রাষ্ট্রের শিক্ষা সেক্টরের দায়িত্ব রাষ্ট্রের শিশু নাগরিককে রাষ্ট্রের কল্যাণ উপযোগী সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র নাগরিকদের নিকট থেকে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করতে পারে না। এই কারণে শিশুর জন্ম থেকে দেশপ্রেমিক, বিজ্ঞানমনস্কতা, সৃজনশীল ও পূর্ণায়ত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করতে হয়। এই লক্ষ্যে শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, আবেগিক, মানবিক, নৈতিক, নান্দনিক বিকাশ ঘটিয়ে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করার নিমিত্তে শিক্ষা ব্যবস্থায় আদর্শ শিক্ষক প্রয়োজন। আদর্শ শিক্ষক তৈরিতে শিক্ষকের শিক্ষককে'ই শিক্ষকের নিয়ন্ত্রক হিসেবে প্রয়োজন। আমরা আধুনিক সমাজে যার নাম দিয়েছি প্রশাসক; নামটা পরিবর্তন জরুরি। প্রশাসক যখন নিয়ন্ত্রক বা মেন্টর হিসেবে কাজ করেন তখন তা মানসম্মত শিক্ষাদানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, এই প্রশাসক রীতিমতো ক্ষমতার ভারসাম্যহীন প্রভুতে পরিণত হওয়ায় শিক্ষকের চেয়ে সম্ভ্রান্ত রূপে হাজির হয়েছেন। শিক্ষকের সামনে তারা নত হন না, নত হন শিক্ষক! অথচ মানসম্মত শিক্ষার জন্য শিক্ষকের অবস্থানই হতে হবে সকলের উপরে। এই আধুনিক সভ্যতায় টেকসই উন্নয়নে মানসম্মত শিক্ষা ব্যতীত উন্নয়ন পণ্ডশ্রম ছাড়া কিছুই নয়। কারণ রাষ্ট্রীয় নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, শিক্ষক নিয়োগ, প্রশিক্ষণ,ব্যবস্থাপনা, কারিকুলাম প্রণয়ন, পাঠদান পরিকল্পনা, আর্থিক পরিকল্পনা, অর্থ ব্যয়ের সময় ও পদ্ধতি নির্ধারণ, অবকাঠামোর ধরণ, ক্লাস সংখ্যা, শিক্ষকের নিয়ন্ত্রণ কোনোকিছু শিক্ষকের হাতে নেই; এমন কী শ্রেণি কক্ষের পড়ানোর কন্টেন্ট। সকল কিছুর নিয়ন্ত্রণ বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের হাতে। তাহলে তো শিক্ষায় আমাদের গোড়ায় গলদ থেকেই যাচ্ছে!
আমাদের জনপ্রশাসনের সিদ্ধান্ত হয় উপর থেকে, এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নেই গবেষণা, নেই বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, নেই প্রকৃত সংশ্লিষ্টদের সংশ্লিষ্টতা। দেশের লক্ষ লক্ষ বেকার উচ্চ শিক্ষিত থাকতে এসএসসি পাশ বা এইচএসসি পাশ শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে কোন গবেষণা হয়েছিল কী? তার আউটপুট ও আউটকাম কী হবে তার ধারণা ছিল কি? রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণী এই সিদ্ধান্ত যে প্রশাসন গ্রহণ করেছিলেন; তারা শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কি?
আবার উচ্চ শিক্ষিত যে কয়জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা পাঠদানে আন্তরিক কিনা, তারা নিজেরা নিজেদের মর্যাদা বোঝেন কিনা? তারা পাঠদান করে মানসিকভাবে তৃপ্ত কিনা? এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হলে, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে শিক্ষায় সরাসরি সম্পৃক্ত থাকাটা জরুরি ছিল। কারণ এগুলো বুঝতে অবশ্যই শিক্ষকই হতে হবে; শিক্ষায় সরাসরি যুক্ত থাকতে হবে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। শুধু বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েই সিদ্ধান্ত গ্রহণের চেয়ারে বসে যাওয়া রাষ্ট্রের জন্য অচলায়তন তৈরির প্রাথমিক ধাপ ব্যতীত কিছু কী?
৪৩তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের নিয়োগ প্রজ্ঞাপনের শেষ লাইনগুলো এমন, "যোগদানকৃত সহকারী কমিশনারগণকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।" আসলে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগের উপর বিসিএস এ কোন পরীক্ষা, পড়াশোনা কিংবা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু এই দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তাহলে এই কাজের উপযুক্ত করে তৈরি না করে এই কাজে নিয়োগ দেওয়ার ফলাফল জনগণকেই ভোগ করতে হবে। আর এই কারণেই ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। অথচ এই কাজ করার জন্য পৃথক একটি বিচারিক ক্ষমতাসম্পন্ন সার্ভিক রয়েছে। ঠিক এইভাবে প্রতিটি পদে একটি ক্যাডারের পদ দখল অব্যাহত থাকলে জনসেবা কতটুকু সম্ভব?
এভাবেই এসএসসি পাশ শিক্ষক নিয়োগের মত জাতীয় সিদ্ধান্ত তাদের হাত ধরে এসেছে। কারণ, প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তের ফসল এই লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীরা অপূর্ণ শিক্ষা গ্রহণ করে পূর্ণ বয়স্ক নাগরিক হচ্ছেন। তারা আদর্শ নাগরিকের আচরণই শিখছেন না। কারণ শিক্ষকের প্রয়োজনীয় ভিত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, ব্যক্তি উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, আত্মউন্নয়ন প্রশিক্ষণ, শিশুতত্বের উপর পড়ালেখা, শিশু-মনোবিজ্ঞান, শিক্ষাবিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের পথরুদ্ধ হয়ে আছে। অভিভাবকদের বুঝতে অবশ্যই সমাজবিজ্ঞান নিয়ে প্রশিক্ষণ এবং শেষে বিষয়ভিত্তিক নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন; এগুলো বুঝতে এবং এগুলোর ব্যবস্থাপনায় অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষকেরই থাকতে হবে। কারণ শিক্ষার্থীর মন বোঝার ক্ষমতা, বসয়, মন ও সামর্থ্য বুঝে পাঠদান করাতে হয়। এগুলোর খবর বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার বুঝেন তো? এগুলো বোঝার ক্ষমতা একমাত্র শিক্ষার সাথে শ্রেণি কক্ষে উপস্থিত শিক্ষক যতটা গভীরভাবে বুঝবেন সেভাবে দূর থেকে সম্ভব নয়। নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে এই তথ্য ও জ্ঞানগুলো খুবই দরকার। এখানে ছয় মাস, ওখানে একবছর, ঐখানে দুই বছর করে ৩০২ কমিটির সভাপতির ব্যস্ততায় প্রতিটি খাতের গুরুত্ব যথাযথভাবে বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। এটা ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা নয়; এই সীমাবদ্ধতা সিস্টেমের। তাই এই সিস্টেম বদলাতে হবে। যার কাজ তাকে করতে দিতে হবে। যার মা মরে গেছে তাকে কাঁদতে দিতে হবে। অন্যের বাপ-মা মরে যাওয়ার কান্না পাড়া-প্রতিবেশী কাঁদলে তা কান্না হয় না, যা হয় তা অভিনয়। অভিনয় করে আধুনিক সভ্যতায় রাষ্ট্র সামনে যায় না। নিজের কাজ পাড়াপ্রতিবেশী করেন বিধায় শিক্ষা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় নানা ত্রুটি, দুর্বলতা, অসংগতি এবং পরিকল্পনার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে; ফলে ঊষর একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে উঠছে।
২০২৪ সালের পরিসংখ্যান মোতাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিএইচডিধারী শিক্ষক আছেন ৩৬ জন, ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৯ জন মাস্টার্স পাস, ২১ হাজার ৪৩৫ জন, স্নাতক (পাস) ১ লাখ ৪ হাজার ৬১ জন স্নাতক (সম্মান), এমবিএ ডিগ্রিধারী ৫ হাজার ৯২৪, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ১ হাজার ৪৫৮, বিএসসি ইন অ্যাগ্রিকালচার ৩০৯, বিএসএস ডিগ্রিধারী ১০ হাজার ৮৫, ফাজিল ১ হাজার ৯৯৬, কামিল ৫ হাজার ৭২, এলএলএম ৩৩৫, এলএলবি ৩০৮, বিএড (অনার্স) ২৯৬, পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ১৩৩ জন, এসএসসি এবং এইচএসসি পাশ শিক্ষক ৮০ হাজার মোট শিক্ষক সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮১ জন। এই এসএসসি বা এইচএসসি পাশ শিক্ষক কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা একজন শিক্ষকের মতো পড়ানোর সামর্থ্য রাখেন না। এই বিষয় বুঝতে হলে শ্রেণি কক্ষে সরাসরি থাকতে হবে, তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। প্রয়োজন উপযুক্ত গবেষণা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সফলভাবে পড়ালেখা শেষ করে কমপক্ষে ৮ লক্ষ বেকার বসে আছেন; ৮০ হাজার এসএসসি পাশ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন হলো কার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ ৮ লক্ষ রেখে এসএসসি পাশ ৮০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলো! সিদ্ধান্ত কারা নিয়েছিল? কমিটিতে কারা ছিলেন? এই সিদ্ধান্তে নিয়োগকৃত ৮০ হাজার শিক্ষক আগামী ৩০ বছর লক্ষ লক্ষ শিশুকে পড়াবেন! ফলাফল জাতি ভোগ করবেন।
মাধ্যমিকে কারিকুলাম পরিবর্তণ, প্রশিক্ষণে বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণিতে যেখানে সেখানে পাঠদান অনুমোদন, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণে স্থবির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরো শিক্ষা সেক্টোরকে ভোগাচ্ছে। উপজেলার কোন কোন কলেজে ৪/৫ বিষয়ে একজন শিক্ষক নাই, বিভাগ ও মহানগরীতে একটি বিষয়ে ২০ জন শিক্ষকও আছেন! ৩২৯টি সরকারি কলেজের মধ্যে কমপক্ষে শতাধিক কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদ খালি রয়েছে। শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের অধিকাংশ প্রশাসনিক পদ্ও খালি! সেবা প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন আর অংশীজন হয়েও পদায়ন প্রত্যাশিতরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই পদায়ন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের হাতে থাকায় বিশেষ কারণে এই অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে; যা কাম্য নয়। এই ক্যাডার সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নাই। সরকারি কলেজের বদলি পদায়ন প্রভাষক পর্যায়ে আঞ্চলিক পরিচালক এবং অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর করা উচিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অফিসগুলোর পদে পদায়ন প্রদান করতে পারেন। তবে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বা উপপরিচালক বা পরিচালক পদে পদায়ন দেওয়ার পর কোন ডেস্কে তিনি কাজ করবেন তা মহাপরিচালকের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। অভ্যান্তরীণ ডেস্ক পরিবর্তণের ক্ষমতা মহাপরিচালকের প্রাপ্য; অন্যথায় মহাপরিচালকদের থেকে এডিগণ বেশি ক্ষমতা ভোগ করেন; নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এই বদলিগুলো অনলাইন নম্বর ভিত্তিক রেটিং করে ৮০% নম্বর রাখা যেতে পারে এবং ২০% নম্বর কর্তৃপক্ষ হাতে রেখে কার্যক্রম করতে পারেন। তবে যা কিছুই করা হোক না কেন তার উদ্দেশ্য সৎ হতে হবে এবং জনগনের সেবা কেন্দ্রীক হতে হবে।
এমনইভাবে শিক্ষায় অসংখ্য অসঙ্গতিপূর্ণ সিদ্ধান্ত শিক্ষাকে যেমন পিছিয়ে দিয়েছেন; তেমনি স্বাস্থ্য, কৃষির মতো সেক্টরগুলো ভুগছে। কারণ সেখানে বিশেষায়িত জনবলের এবং নেতৃত্বের অভাব।
২০২৪ সালের তথ্য মোতাবেক ১ কোটি ৯৮ লক্ষ শিশু প্রাথমিকে পড়ালেখা করছেন। প্রায় ২ কোটি শিশুর অপূর্ণ পড়ালেখা শেষ (!) করা শিশু যখন মাধ্যমিকে ভর্তি হচ্ছেন তখন তিনি মাধ্যমিকের বইয়ের পড়ালেখা গ্রহণ করতে সক্ষম হচ্ছেন না। সেখানেও শত অসংগতি ও ভয়াবহ পরিসংখ্যান আছে। সেগুলোও ওভারলুক করে শর্ট সিলেবাস, অটোপাশ, গোঁজামিল দিয়ে সনদ দেওয়া হচ্ছে বহুদিন যাবত। তারপর তারা বাংলাদেশের মানবসম্পদ না হয়ে হয়ে যাচ্ছেন বেকার এবং পরিবারের বোঝা; সর্বোপরি রাষ্ট্রের বিভিন্ন সমস্যা। এই শিক্ষিত বেকার ২০২৪ সালের জুন নাগাদ ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার! এত এত বেকারের কারণে বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আজকের এই শিক্ষার্থীরাই অনার্স, মাস্টার্স পড়তে এসে শ্রেণি কক্ষে প্রায় শতভাগ অনুপস্থিত। নিয়মকানুন খাতা-কলমে থাকলেও সেগুলোর ব্যবহার নাই। অনিয়ম পালন করাটাই নিয়ম।
'বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো)' প্রযুক্তি ভিত্তিক বহুমাত্রিক গবেষণা ও প্রয়োগ সংক্রান্ত সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি মৎস্য, ভূতত্ত্ব, সমুদ্র বিজ্ঞান, মানচিত্র অঙ্কন, পানি সম্পদ, কৃষি, বন, ভূমি ব্যবহার, আবহাওয়া, পরিবেশ, ভূগোল, শিক্ষা এবং জ্ঞান ও বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রে মহাকাশ ও দূর অনুধাবন প্রযুক্তিকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করেন। আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারিক প্রয়োগের নিমিত্তে গবেষণা কাজ করে থাকেন। এই প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন অতিরিক্ত সচিব! বাংলাদেশের 'বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো)' এর পারফরম্যান্স জাতি সকলেই জানি।
অন্যদিকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)' এর ১৭,০৯৯ জন কর্মচারী আছেন যার প্রশাসনিক প্রধান একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী। এখানে ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস থেকে অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করা হয় নাই। এ কারণে তারা কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন কিন্তু; আমরা পারিনি। এমনই অনেক বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো সাধারণ প্রশাসন দ্বারা পরিচালনা না করে বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালনা করা দরকার।
কিন্তু ঢালাওভাবে আমাদের দুই একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত প্রায় শতভাগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, অধিদপ্তর , পরিদপ্তরে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া আছে। নিজের সার্ভিসের বাহিরে প্রেষণ, লিয়েন, বৈদেশিক নিয়োগ, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ জবর-দখলেও একটি সার্ভিস বিশেষ আপত্তিকর ভূমিকা পালন করেন।
দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে আর্থিক ও অনার্থিক সুবিধা ভোগ করতে গিয়ে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার সার্ভিসের ৩০৯৭টি তফসিলভুক্ত পদকে ১২৮% বৃদ্ধি করে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে ৭০৭৬টি পদে উন্নীত করা হয়। বিসিএস (ইকোনমিক) ক্যাডার বিলোপ করা হলেও তফসিলে গ্রে-২ এর ০৯টি প্রধান নামের পদ, যুগ্ম প্রধান নামের ৫৪টি পদ, উপপ্রধান ১০৯টি পদ, সিনিয়র সহকারী প্রধান ২৯৫টি পদ বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এমন কী ৬৪টি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ পদ; সচিব, জেলা পরিষদের ৬১টি পদ বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
যে সকল কর্মস্থলে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার প্রয়োজন ছিল না; সেকল কর্মস্থলেও বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য পদ সৃষ্টি ও তফসিলভুক্ত করে তাদের নিজস্বতা ভুলে গিয়ে সিভিল সার্ভিসকেই হেয় করা হচ্ছে কিনা ভাবার সময় এসেছে। অথচ আমাদের প্রশাসন ক্যাডার ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সাথে নিজেদের তুলনা করেন।
দেখা যাক, তাদের জনসংখ্যা এবং প্রশাসন ক্যাডার সংখ্যা কেমন! ভারতের আইএএস এর পূর্ব নাম ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস। নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং, অপরদিকে আমাদের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ভারতের মোট জনসংখ্যা ১৪৫ কোটি (প্রায়) এবং ক্যাডার সংখ্যা ৪৯২৬ জন সদস্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন দ্বারা, ৩৫১১ জন আধিকারিক সরাসরি নিযুক্ত এবং ১৪১৫ জন আধিকারিক রাজ্য সিভিল দ্বারা উন্নীত। আর আমাদের মাত্র ১৮ কোটির জনগণের বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার প্রতি বাড়িবাড়ি অর্থাৎ ৭০৭৬জন এবং ছুটি, প্রেষণ এবং প্রশিক্ষণের বিপরীতে ১০% পদ সংরক্ষণ থাকে। ব্যক্তি স্বার্থে তত্র তত্র বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের পদ সৃষ্টি ও বিস্তার বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার সার্ভিসের মান হ্রাস করছে এটাও বলা যায়; যা বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সৃষ্টি ও উদ্দেশ্যের ইতিহাসের সাথেও যায় না।
২০২৪ সালের গবেষণায় জনপ্রশাসন এর বিভিন্ন ইনডেক্সে Blavatnik School of Government, Uk রিপোর্ট ১১৮ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৩ তম এবং পাবলিক পলিসি তৈরি ও বাস্তবায়নে আমরা ১২০টি দেশের মধ্যে ১০৩ তম; স্ট্রাটেজি এবং লিডারশিপে একই গবেষণায় ৯৩তম; Trust & Integrity'তে ১১২তম। usnews.com এর গবেষণায় প্রকাশিত এফিসিয়েন্ট ব্যুরোক্রেটিক টিমের তালিকায় বাংলাদেশ ৮৯টি দেশের মধ্যে ৭১তম। Robust Laws & Policies বিষয়ে ১১৩টি দেশের মধ্যে ৯৮তম (CHANDLER GOOD GOVERNMENT INDEX 2024)। সামগ্রিক ইন্ডেক্স ১১৩টি দেশের মধ্যে ৯১ তম! ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের Country Policy and Institutional Assessment (CPIA) মোতাবেক ২০১৬ খ্রি. ৬ এর মধ্যে ৩.০০ পয়েন্ট, ২০২৩ খ্রি. জনপ্রশাসন ৬ এর মধ্যে ২.৫ পয়েন্ট, ২০২০ খ্রি. ২.০০ পয়েন্ট, ২০২১ খ্রি. ২.০০ পয়েন্ট, ২০২২ খ্রি. ২.০০ পয়েন্ট প্রমাণ করে বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের মান নিম্ন হচ্ছে! ২০১৯ খ্রি. তারিখের University of Dhaka এবং University of Nottingham এর গবেষণায় জানা যায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সার্ভিস পর্যায়ে Integrity প্রত্যাশিত মানের চেয়ে কম এবং মাঠ পর্যায়ে সহকারী কমিশনার থেকে বিভাগীয় কমিশনার পর্যায়ের Integrity প্রত্যাশিত মানের চেয়ে অনেক কম। সব সেক্টরের সবকিছু দখল, সবকিছু একাই করার মানসিকতা এবং ত্রুটিপূর্ণ সিস্টেম আজকের উপরি বর্ণিত হতাশাব্যঞ্জক ফলাফলের জন্য দায়ী।
ডিসি এবং ইউএনও যে সকল সরকারি দিবস পালন পালন করেন, উক্ত দিবস পালনে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেন্দ্র থেকে বরাদ্দ থাকে এবং অবশিষ্ট অনির্দিষ্ট পরিমাণ প্রয়োজনীয় অর্থ স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশনা থাকলেও তার নির্দিষ্টতা নাই; নিয়ম নাই। এ কারণে কত পরিমাণ অর্থ স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করবেন, কত পরিমাণ অর্থ ব্যয় করলেন তার যথাযথ জবাবদিহিতা না থাকলেও অনেক সৎ অফিসার অনিয়ম করেন না, কিন্তু; অসৎ অফিসার স্থানীয়ভাবে কোটি টাকা সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করলেও দেখার বা ব্যবস্থা নেওয়ারেও জবাবদিহিতার কোন সুযোগ নাই; নাই স্বচ্ছতা। এইভাবে অনেক ক্ষেত্রে সিস্টেমের ফাকফোকরে'ই দুর্নীতিকে প্রমোট করা হয়ে থাকে। এই ধরনের বিষয়গুলো বাস্তবতার নিরিখে সংস্কার জরুরি।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (নিয়োগ) বিধিমালা, ১৯৮১ মোতাবেক পার্ট ৭ এ বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদগুলো হলো- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (১৮ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন), পরিচালক (১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন), উপপরিচালক-সাধারণ শিক্ষা (১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন), উপপরিচালক-শারীরিক শিক্ষা (০৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন), সহকারী পরিচালক-সাধারণ শিক্ষা (০৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); সহকারী পরিচালক- [শারীরিক শিক্ষা (পুরুষ) (০৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; সহকারী পরিচালক-সাধারণ শিক্ষা (০৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); সহকারী পরিচালক- [শারীরিক শিক্ষা (মহিলা) (০৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; অধ্যক্ষ [(মাস্টার্স এবং অনার্স কলেজ) (১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; অধ্যক্ষ, [(উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ) (১৮ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); উপাধ্যক্ষ, [(মাস্টার্স ও অনার্স কলেজ) (১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; অধ্যক্ষ মাদ্রাসা ইন আলিয়া (১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); অধ্যাপক [(নিয়োগের সময় ৪৫ বছরের বেশি নয়, বিভাগীয় প্রার্থীর জন্য ৫০ বছর) (১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; প্রধান মাওলানা, আলীয়া মাদ্রাসা (১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); উপাধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষ [(ডিগ্রি কলেজ ও উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ) (১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; উপাধ্যক্ষ, মাদ্রাসা ইন আলিয়া (১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); সহযোগী অধ্যাপক [(শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজসহ সকল সরকারি কলেজ) (১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; সহকারী অধ্যাপক, [(শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজসহ সকল সরকারি কলেজ) (৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন)]; প্রভাষক এবং সহকারী মাওলানা, [(অনার্স, মাস্টার্স, উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রি এবং আলিয়া মাদ্রাসা)]; অধ্যক্ষ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ (১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ (১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); সহকারী অধ্যাপক, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ (৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); প্রভাষক, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ; স্কুল এবং পরিদর্শন শাখার জন্য উপপরিচালক (জোনাল অফিস); পরিদর্শক [(স্কুল) (জোনাল অফিস)]; পরিদর্শিকা [(স্কুল) (জোনাল অফিস)]; জেলা শিক্ষা অফিসার; সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা; সহকারী পরিদর্শক এবং সহকারী পরিদর্শিকা (জোনাল অফিস); সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার; সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষিকা; অধ্যক্ষ, কমার্সিয়াল ইনস্টিটিউট, চিফ ইন্সস্ট্রাক্টর, ইন্সস্ট্রাক্টর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জন্য- পরিচালক (১২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); উপপরিচালক, (১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); সহকারী পরিচালক, (০৩ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন); শিক্ষা কর্মকর্তা, গবেষণা কর্মকর্তা; পরিচালক, ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি ফর প্রাইমারি এডুকেশন; উপপরিচালক, ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি ফর প্রাইমারি এডুকেশন; বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি ফর প্রাইমারি এডুকেশন; জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, তত্ত্বাবধায়ক, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী বিশেষজ্ঞ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব প্রাইমারি ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট পদগুলো বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদছিল।
আবার ৫ জানুয়ারি ১৯৮০ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সাধারণ শিক্ষা) গঠন ও ক্যাডার বিধিমালা, ১৯৮০ মোতাবেক বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের পদের তফশিল ছিল- পরিচালক, জনশিক্ষা; যুগ্মপরিচালক, জনশিক্ষা; উপপরিচালক, জনশিক্ষা (ডিপিআই); সহকারী পরিচালক, জনশিক্ষা (এডিপিআই); উপ-সহকারী পরিচালক, জনশিক্ষা; শিক্ষা অফিসার; বিশেষজ্ঞ (প্রাপ্ত বয়স্ক শিক্ষা)'র মোট ২৫টি পদ; কলেজ শাখা ও স্কুল পরিদর্শন শাখার অন্তর্ভুক্ত ছিল- অধ্যক্ষ [(সম্মান কোর্স বিশিষ্ট কলেজ) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদানকারী প্রশিক্ষণ কলেজ (টিটি কলেজ)]; পরিচালক, বাংলাদেশ শিক্ষা সম্প্রসারণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট; অধ্যক্ষ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ; অধ্যক্ষ, আলীয়া মাদ্রাসা; প্রধান মাওলানা, আলীয়া মাদ্রাসাসহ মোট ১০টি পদ; অধ্যক্ষ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল; উপাধ্যক্ষ, (সম্মান কোর্সবিহীন কলেজ); উপাধ্যক্ষ (টিটি কলেজ); সহযোগী অধ্যাপক (সম্মান কোর্স বিশিষ্ট ও সাধারণ কলেজ)সহ মোট ২৬টি পদ; উপপরিচালক, বাংলাদেশ শিক্ষা সম্প্রসারণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট; সহকারী অধ্যাপক, পরামর্শক, বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ শিক্ষা সম্প্রসারণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট; সহকারী অধ্যাপক (আলীয়া মাদ্রাসা) অতিরিক্ত মাওলানা, তত্ত্বাবধায়ক, হাই মাদ্রাসা; অধ্যক্ষ, রাজশাহী সরকারি মাদ্রাসা; শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, আলীয়া মাদ্রাসা, এএফ.ই. চারুকলা কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজসহ কলেজসমূহের প্রভাষক; সহকারী মৌলভি (আলীয়া মাদ্রাসা); স্কুল পরিদর্শন (আইএস); স্কুল পরিদর্শিকা; প্রধান শিক্ষক (সরকারি মাধ্যমিক স্কুল) প্রধান শিক্ষিকা (সরকারি মাধ্যমিক স্কুল); তত্ত্বাবধায়ক, পিটিআই; জেলা স্কুল পরিদর্শক, সহকারী স্কুল পরিদর্শক; সহকারী স্কুল পরিদর্শিকা; সহকারী প্রধান শিক্ষক (সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়); সহকারী প্রধান শিক্ষিকা (সরকারি মাধ্যমিক স্কুল) সহকারী তত্ত্বাবধায়ক পিটিআইসহ সর্বমোট ১৯৮৯টি পদ। এই পদগুলো বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের তফসিলভুক্ত হলেও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা অধিদপ্তরসহ অসংখ্য পদ বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার কর্তৃক দখল হয়েছে। এমন কী যে বৃহৎ সরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে সেই পদগুলোও সংরক্ষণ করা হয় নাই; কারণ এই ক্ষমতা বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের হাতে নাই।
অপরদিকে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১; কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুলস, ১৯৮০ এবং সিনিয়রিটি রুলস, ১৯৮৩ এর বিধি-৪ মোতাবেক এসআরও-২৬২এল/৮৬/এমই/আইসি-১/৮৬; তারিখ ১ জুলাই ১৯৮৬ খ্রি. এর তফশিল মূল ভিত্তি। এই প্রেক্ষিতে ১৯৮৭ সালে গেজেটেড তফসিলভুক্ত পদগুলোতে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। পদগুলি নিম্নরূপ-
(১) বিভাগীয় কমিশনার/সদস্য, ভূমি প্রশাসন বোর্ড- মোট ০৬টি পদ; চেয়ারম্যান, ভূমি প্রশাসন বোর্ড ০১টি পদ; (২) মহাপরিচালক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বোর্ড/ ভূমি সংস্কার কমিশন/ পরিচালক, সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস মোট ৩টি পদ; (৩) অতিরিক্ত কমিশনার/ উপ পরিচালক, সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস মোট ১০টি পদ; (৪) সচিব, ভূমি প্রশাসন বোর্ড/ পরিচালক, ভূমি রেকর্ড/ পরিচালক, জরিপ/ সামরিক এসেস্ট অফিসার, পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম/সেনানিবাস/ভূমি সংস্কার উপ-কমিশনার মোট ৮টি পদ; (৫) জেলা প্রশাসক/ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক/ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/ অতিরিক্ত প্রধান মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/ ঊর্ব্ধতণ সহকারী সচিব/ সেটেলমেন্ট অফিসার/ উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার)/ সেনানিবাস নির্বাহী অফিসার/ উপজেলা নির্বাহী অফিসার/ সহকারী সচিব (ভূমি প্রশাসন বোর্ড)/ সামরিক এস্টেট অফিসার মোট ৮৩৬টি পদ; (৬) সহকারী পরিচালক (স্থানীয় সরকার)/রাজস্ব ডেপুটি কালেক্টর/ ভূমি হুকুম দখল অফিসার/ সিনিয়র সহকারী কমিশনার/ বিচারক-ম্যাজিস্ট্রেট/ সিটি ম্যাজিস্ট্রেট/ চার্জ অফিসার/ সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার/ উপ পরিচালক জরিপ/ উপ পরিচালক ভূমি রেকর্ড/ মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোট ৪৪১টি পদ; (৭) সহকারী কমিশনার/উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট/উপজেলা রাজস্ব অফিসার/ সেনানিবাস নির্বাহী অফিসার/ শাখা প্রধান (ভূমি প্রশাসন বোর্ড)/ প্রেস অফিসার (সেটেলমেন্ট প্রেস)/ ম্যাজিস্ট্রেট, মেরিন কোর্ট (শিপিং বিভাগ)/স্পেশাল অফিসার, মেরিন নিরাপত্তা (শিপিং বিভাগ)/ ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা পৌর কর্পোরেশন/ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম পৌর কর্পোরেশন/ ম্যাজিস্ট্রেট রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ/ ক্ষমতাপ্রাপ্ত অফিসার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মোট ১৭৯২টি পদ; সর্বমোট ১৭৯২টি পদ। বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সহকারী কমিশনার পদে প্রাথমিকভাবে উপরি বর্ণিত পদে নিয়োগ পাওয়ার পর তাদের অপ্রয়োজনে অপ্রয়োজনে চারিদিকে বিস্তার ঘটানো হয়েছে। এবং তাদের তফসিলভুক্ত পদের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তফশিল ভুক্ত যে পদগুলোর বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া হয় বর্ণিত পদগুলোর মধ্যে উপ সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত পদগুলো নাই। তাদের তফসিলভুক্ত পদে অন্য ক্যাডারের পার্শ্বপ্রবেশের সুযোগ নাই। উপসচিব পদগুলো কোন ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ নয়। নিয়োগের সময় যে শ্রেণি বিভক্তি হয় সেই শ্রেণিকরণও উপসচিব পদের নিশ্চয়তা প্রদান করে না। কারণ উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব এবং সিনিয়র সচিব পদগুলো বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদের অন্তর্ভুক্ত নয়; কারণ উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব এবং সিনিয়র সচিব পদগুলো বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ পদ। এই পদগুলোতে বাংলাদেশ সরকার সকল ক্যাডার সার্ভিস থেকে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের মাধ্যমে সিনিয়র সার্ভিসে নিয়োগ করেন। তবুও এই পদগুলোতে শুধুমাত্র বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার থেকে ৭৫% কোটায় এবং অবশিষ্ট ২৫টি ক্যাডার থেকে মাত্র ২৫% সিনিয়র সার্ভিসে এসএসবি'র মাধ্যমে নিয়োগ করা হচ্ছে।
সংস্কার সামনে রেখে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার থেকে ৫০% কোটায় এবং অবশিষ্ট ২৫টি ক্যাডার থেকে মাত্র ৫০% কোটায় এই সিনিয়র সার্ভিসের জনবল নিয়োগ ও বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) এবং বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারকে ক্যাডার বহির্ভূত করে এই সিনিয়র সার্ভিস বা সরকারের বিশেষ পদে নিয়োগের পথ বন্ধ করার প্রস্তাব করার অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে। অপরদিকে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডার পদোন্নতিতে এই কোটা পদ্ধতি বিলোপ করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দাবি করছেন। প্রকৃতপক্ষে: এই বিষয়ে আইন ও বিধি, রায় কিংবা পর্যবেক্ষণ যা কিছুই থাকুক না কেন, সবকিছু রাষ্ট্রের জনগণের জন্য; এই সবকিছুই হতে হবে জনগণের কল্যাণের জন্য সেটাই ন্যায্যতা এবং নীতি হওয়া দরকার। সংস্কার অবশ্যই জনগণ কেন্দ্রীক হওয়া প্রয়োজন। দক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থা এমন কিছু সুদূরপ্রসারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন যেগুলো আপাতত: মনে হবেপক্ষে যাচ্ছে না; কিন্তু দীর্ঘকাল পরে সেগুলো যদি জনগণের জন্য কল্যাণকর হয়, প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেগুলো বাস্তবায়ন করা দরকার।
কারণ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদানের পর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় মোট ২২টি মডিউলে। এই ২২টি মডিউল বিসিএস (প্রশাসন)সহ ২৬টি ক্যাডারের একই; প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় মডিউল ধরে ধরে। পরবর্তীতে যে সকল প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় সকল প্রশিক্ষণে সকল ক্যাডার কর্মকর্তাদের সমান হিস্যা আছে। সকল ক্যাডার নিজ নিজ প্রশাসন পরিচালনা করেন, পরিকল্পনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সরকারি ক্রয়, নথি ব্যবস্থাপনা, বাজেটিং, বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ, সমন্বয়, প্রকল্পের ডিপি তৈরি, প্রকল্প বাস্তবায়ন-পরিচালনা, শৃঙ্খলা রক্ষা, সরকারের মিশন-ভিশন বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মতো কাজে সমান অংশীজন হিসেবে কাজ করেন। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ টুলস ব্যবহারে প্রায় সকল ক্যাডার কর্মকর্তাই খুব কাছাকাছি মানের। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সিনিয়র সার্ভিসের পদগুলোতে যে সকল কাজ হয় ঐ সকল কাজে সকল সার্ভিসের ক্যাডার অফিসার ক্যাপাবল।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনায় বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার যেভাবে গবেষণা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন; এইভাবে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের পক্ষে শিক্ষার জন্য উপযুক্ত সেবাদান সম্ভব নয়। শিক্ষা প্রশাসন পরিচালনায় শ্রেণিকক্ষ থেকে উঠে আসা বাস্তব জ্ঞানসম্পন্ন জাতীয় মানের অধ্যাপকগণ'ই উপযুক্ত শিক্ষা প্রশাসক বা নিয়ন্ত্রক হতে পারেন। শিক্ষায় নীতি নির্ধারণী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একমাত্র বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তারাই উপযুক্ত।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, মাদ্রাসাশিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষার প্রাথমিক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট গবেষণামূলক শিক্ষার সকল প্রশাসন বিসিএস (সাধারণ) শিক্ষার আওতায় আসলে শিক্ষার সেবা হবে বিশেষায়িত এবং সেবার মান উন্নত হবে। শিক্ষা ক্যাডার শিক্ষার দায়িত্ব প্রাপ্ত হলে শিক্ষা নিয়ে গবেষণা সম্ভব এবং জাতির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, চিন্তার মুক্তির পথ তৈরি হবে। একইভাবে বিদেশে চিকিৎসার লম্বা লাইন হ্রাস করতে হলে দেশে উপযুক্ত ডাক্তার তৈরি, হাসপাতাল তৈরি এবং চিকিৎসা সেবায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে ডাক্তারের হাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার, পরিকল্পনা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল প্রশাসন ছেড়ে দেওয়া উচিত। তেমনিভাবে খাদ্য স্বয়ং সম্পন্ন হতে চাইলে কৃষি ক্যাডারকে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব বুঝে দেওয়া উচিত। দেশের ভূমি সংক্রান্ত সেবার মান বৃদ্ধিতে প্রশাসন ক্যাডারকে নিজের কাজে গুরুত্ব বৃদ্ধি করে তাদের বৈধ তফসিলভুক্ত পদে মনোযোগ দেওয়া দরকার। যেখানে সেখানে ক্যাডার অফিসার নিয়োগ করে অফিস সেটআপ থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয়ে আর্থিক চাপও হ্রাস করা প্রয়োজন। স্ব-স্ব ক্যাডারকে তাদের বিশেষত্ব রাষ্ট্রের প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ব্যবহারের যার কাজ তাকে করতে দিতে হবে। তেমনিভাবে খাদ্য অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর, ডাক অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমবায় অধিদপ্তর, নৌপরিবহণ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, পাট অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বস্ত্র অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর,মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, নিবন্ধন অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, কারা অধিদপ্তর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরগলোর অধিকাংশ মহাপরিচালক অথবা পরিচালক পদে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ আছেন। এই পদগুলোতে বিশেষায়িত জ্ঞানের কর্মকর্তা দায়িত্বপালন করতে পারলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এই সকল পদে যে সকল মেধাবী প্রশাসক ক্যাডার কর্মকর্তা আছেন তাদের বাংলাদেশের ভূমি সংস্কারসহ তাদের বিশেষায়িত পদে কাজে মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলে ভূমি সংক্রান্ত সেক্টরও এগিয়ে যাবে। সকল অংশীজনকেই রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব।
জনগণের সেবা ও বাংলাদেশ সিভিল (ক্যাডার) সার্ভিসের মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে এসে অকারণ কর্তৃত্ববাদী, সরকারি দুর্বৃত্তায়ন করে মানুষের মন থেকে দূরে সরে গিয়ে মানসম্মত সরকারি সেবা অসম্ভব। যেখানে বিশেষজ্ঞ জনবল দরকার সেখানে আমলা প্রীতি, আমলা নির্ভরতা, শোষণ ও অপরাধযন্ত্র ব্যবহার হতে দেওয়া এবং মুখবুজে সহ্য আর কতদিন? একটি বিশেষ ক্যাডার সার্ভিস যদি ময়দায়ের মূল খেলোয়াড় হয়ে 'আমাদের লোক' তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেন তাহলে রাষ্ট্রে কোন প্রতিষ্ঠান'ই প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়াবে না। তাহলে তারা বরাবরের মতো এমপিদের সচিব হবেন; রাজনৈতিক প্রভু হয়ে বসবেন এবং প্রকৃতিও তাদের পক্ষে আচরণ করবেন; জনগণ সেখানে গৌণ'ই রয়ে যাবেন। সংস্কারের জন্য মোহমুক্ত উদ্যোগের এখনই উপযুক্ত সময়। সিভিল সার্ভিসে অধিক দক্ষ, অধিক যোগ্য, অধিক অভিজ্ঞ মেধাবীদের নিয়োগ করার জন্য উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা পদ্ধতি পরিহার করে শতভাগ নিয়োগে পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হলে সেবার মান বৃদ্ধি পাবে এবং জনগণ তার সুফল পাবেন ।
তবে, যে ক্যাডারকেই উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত সরকারেরই সিনিয়র সার্ভিসের এই বিশেষ পদে নিয়োগ প্রদান করা হোক না কেন, যদি দুর্নীতি হ্রাস না করা যায়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত না করা যায়; তাহলে নামমাত্র সংস্কার করে একটি পক্ষকে আরো শক্তিশালী করে কোন পজেটিভ ফলাফল জনগণ পাবে না। আবার বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) এবং বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারকে ক্যাডারের বাহিরে নেওয়ার বিষয়ে পরবর্তী সীমাবদ্ধতাগুলো মাথায় রাখতে হবে। আমাদের আরো মাথায় রাখতে হবে, বারবার একপেশে সংস্কারের মাধ্যমে সবোর্ত্তম পাওয়ার আশায় আমরা উত্তমটিও যেন হারিয়ে না ফেলি।
লেখক: প্রভাষক (হিসাববিজ্ঞান), রামগড় সরকারি কলেজ, খাগড়াছড়ি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
উইজডেনের বর্ষসেরা একাদশে তাসকিন
মিস্টার বাংলাদেশ নজরুল আর নেই
ফেদেরারের রেকর্ডে জোকোভিচের হানা
ফেভারিটদের হোঁচটের রাত
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশ
পারিশ্রমিক না পেয়ে অনুশীলন বর্জন!
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
ঈশ্বরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ
দেশকে বিভাজনের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
কর্নওয়ালের বিপিএল শেষ
রানপ্রসবা সাগরিকায় রান হবে তো?
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
অনলাইন ব্যবস্থাপনা ও সফটওয়্যার হালনাগাদ কাজ শুরু
বড় বিনিয়োগকারীদের দেয়া হবে রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ কারখানা : বিডা
টানা পতনে শেয়ারবাজার
সর্বাবস্থায় জন্মভূমির মানুষকে ভালোবাসি :আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী
আ.লীগ নেতাকে হাতুড়িপেটায় মাথা ফাটাল যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দল নেতারা
নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
রাজশাহীতে কৃষির উন্নয়নে মতবিনিময় সভা